খাসিয়া জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে বসবাসরত মাতৃতান্ত্রিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্যতম। ঐতিহ্যবাহী এ নৃগোষ্ঠীর জীবনধারা বৈচিত্র্যময় ও কৌতুহলোদ্দীপক।
খাসিয়া | Khasia
নামকরণ (Naming)
খাসিয়া ভাষা অনুযায়ী 'খেও' থেকে 'থিউ' এবং 'থিউ' থেকে 'খাসিয়া' শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। খাসিয়ারা মনে করেন, 'খাসি' নামের অর্থ 'মাতৃগর্ভজাত।
তাদের বিশ্বাস যে, অতীতে তারা একই মায়ের গর্ভ হতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এ কারণে পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে নানা উপদল সৃষ্টি হলেও এখনও পর্যন্ত তারা নিজেদের 'খাসি' নামে পরিচয় এবং গোষ্ঠীতে মাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।
অনেকে মনে করেন, এদের আদিনিবাস আসামের "মাসিয়া-জয়ন্তিয়া পাহাড়ে হওয়ায় তাদেরকে খাসিয়া' বলা হয়।
অবস্থান ও জনসংখ্যা (Location and population)
সিলেটের সীমান্তবর্তী অঞ্চল জয়ন্তিয়া পাহাড়, তামাবিল, জাল, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলায় খাসিয়াদের বাস। আইরিশ, ভাষাতাত্ত্বিক গ্রিয়ারসন (George Abraham Grierson)-এর মতে, "খাসিয়ারা চীনের হোয়াংহো ও ইয়াংসি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে বাস করত।
পরে উক্ত নদীপথে এরা ভারতীয় উপমহাদেশে আসে।” ঐতিহাসিকেরা মনে করেন, খাসিয়ারা তিব্বত থেকে আসাম, এরপর সিলেটে আগমন করেছে প্রায় ৫০০ বছরেরও আগে ১৯০১ সালের শুমারি অনুযায়ী সমগ্র উপমহাদেশে ৪৯০১ জন খাসিয়া বাস করতো; এর মধ্যে শুধু সিলেটে বাস করতো ৩০৮৩ জন।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৮০টিরও বেশি খাসিয়াদের গ্রাম রয়েছে। আলাদাভাবে কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে বসবাসকারী খাসিয়াদের সংখ্যা প্রায় ৩০,০০০।
যদিও ২০১১ সালের আদমশুমারিতে খাসিয়া জনসংখ্যা দেখানো হয়েছে ১১,৬৯৭ জন। কিন্তু বাংলাদেশ খাসিয়া সমিতি' তাদের সংখ্যা ৩০,০০০ দাবি করে।
নরগোষ্ঠীগত পরিচয় (Racial identity)
খাসিয়ারা মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এদের দেহের রং ফর্সা, নাক চ্যাপ্টা, উচ্চতা খর্বাকৃতির, চোখ ছোট, মুখাকৃতি গোলাকার, পায়ের গোড়ালি মোটা, চিবুক উন্নত, দাড়ি-গোঁফ-এর প্রাচুর্য কম।
খাসিয়া নারী-পুরুষ সুঠামদেহের অধিকারী ও কঠোর পরিশ্রমী। এদের সাথে চীনা ও বার্মিজদের অনেক মিল রয়েছে ।
গোত্র বিভাগ (Division of clan )
খাসিয়ারা বেশ কয়েকটি গোত্রে বিভক্ত। এসব গোত্রের মধ্যে রয়েছে- দিয়েংগো, যাপাং, খার, বং, খাইরিয়েম, লিংডো, মাজাও, পাংখন, রাংবাহ ইত্যাদি। প্রতিটি গোত্রের আবার একাধিক উপ-গোত্র আছে।
এসব উপ-গোত্রের মধ্যে লুখী, মাওয়াং, উনইদ, খংলা, লামিন, লাম্বা, মাউপট, মাওলাং, মার্মেন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গোত্রভুক্ত লোকেরা প্রত্যেকেই পরস্পরের প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল।
প্রত্যেক গোত্র পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গার ভিন্ন ভিন্ন গ্রামে বসবাস করে। তাই তাদের মধ্যে ভাষাগত আঞ্চলিকতার পার্থক্য দেখা যায়। যদিও সব গোত্রের ভাষার মূল উৎস খাসিয়া ভাষা ।
বিঃদ্রঃ
খাসিয়া জনগোষ্ঠীর উপগোত্রগুলোর নাম কোনো প্রাণির নামানুযায়ী রাখা হয়। এবং যে প্রাণির নাম অনুযায়ী গোত্র বা উপগোত্রের নামকরণ হয়েছে সে প্রাণির প্রতি সংশ্লিষ্ট গোত্র বা উপগোত্রের বিশেষ সংস্কার রয়েছে।
সামাজিক সংগঠন (Social structure)
খাসিয়া গ্রামকে পুঞ্জি বলা হয়। খাসিয়াদের গ্রামে দলবদ্ধভাবে বসবাস করার স্বভাবহেতু ঘরবাড়িগুলো একত্রে পুঞ্জিভূত থাকত বলেই ঐ গ্রামগুলোকে 'পুঞ্জি' বলা হয়।
অন্যদিকে প্রাচীনকালে যেকোনো হাসিয়া গ্রামের সন্নিকটে সংরক্ষিত বনভূমিকে 'পবিত্র বনভূমি' বলা হতো এবং এ সব বনভূমির আশপাশেই পূজা করা হতো।
হয়তোবা এই কারণেই এ সমস্ত খাসিয়া গ্রামকে আর্য ব্রাহ্মণেরা 'পূজাকুঞ্জ' বলে অভিহিত করতো। প্রত্যেক গ্রামেই একজন গ্রাম প্রধান রয়েছে, যাকে 'মন্ত্রী' নামে অভিহিত করা হয়। তিনি গ্রামের শান্তিশৃংখলা রক্ষা ও বিচারকার্য সম্পাদন করেন।
- রাখাইন | Rakhaine | জীবন ও জীবিকা - বিস্তারিত
- পাহাড়পুর | Paharpur | নামকরণ | প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন
সামাজিক ও প্রশাসনিক কাজে সহায়তা করার উদ্দেশ্যে তিনি একজন পরামর্শদাতা নিয়োগ করেন। বিচার সম্পাদন করার জন্য খাসিয়া সমাজে প্রাকৃতিক কিছু অভিনব পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
যেমন- জলপাত্র হিসেবে ব্যবহৃত লাউয়ের খোলের "সাহায্যে দোষ-নির্দোষ পরীক্ষা, জলে ডুবে শপথ গ্রহণ, অগ্নিকুণ্ড অতিক্রমের মাধ্যমে পরীক্ষা ইত্যাদি ।।
ভাষা (Language)
খাসিয়া জাতির ভাষা মন থেমের ভাষার অন্তর্ভুক্ত। কম্বোডিয়াসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশ মন-খেমের ভাষায় কথা বলেন।
খাসিয়া ভাষার লিখিত কোনো বর্ণমালা নেই। বাংলাদেশি খাসিয়ারা তাদের ভাষা লেখার কাজে বাংলা বর্ণমালাই ব্যবহার করেন ।
ধর্মীয় বিশ্বাস (Religious belief)
বর্তমানে এদেশের খাসিয়াদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ খ্রিষ্টধর্মে বিশ্বাসী। তবে তাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এখনও ঐতিহ্যবাহী আদি ধর্ম পালন করে, যা সর্বপ্রাণবান' হিসেবে বিবেচিত হয়।
খাসিয়াদের ধর্মকে দুই অংশে ভাগ করা যায়। একটি হচ্ছে 'কা-নিয়াম-ইন' (জীবিতদের ধর্ম) এবং অপরটির নাম 'কা-নিয়াম-ইয়াপ (মৃতদের ধর্ম)।
খাসিয়াদের মতে, সমগ্র প্রকৃতিই কোনো না কোনো দেবতা-অদেবতা কর্তৃক পরিচালিত হচ্ছে। এই অদৃশ্য শক্তির উদ্দেশ্যে পূজা-পার্বণ এবং উৎসর্গই খাসিয়া ধর্মের মূলমন্ত্র। পূর্বপুরুষ পূজা ও প্রস্তুর পূজা এদের মধ্যে বিদ্যমান।
'উবলাই-নাংবই' তাদের প্রধান দেবতা ও পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা। এরা পারলৌকিক জীবনে বিশ্বাসী নয়। তাদের ধর্ম বিশ্বাসে ঠাকুরকে খাসিয়া ভাষায় 'সাংদহ' বলে।
প্রত্যেক পূজা অনুষ্ঠানে তারা ছাগল ও মোরগ উৎসর্গ করে এবং এর সাথে ব্যবহার করে পান সুপারি। পিতাকে দেবতাজ্ঞানে পূজা করার রীতিও খাসিয়াদের মধ্যে বিদ্যমান।
বিবাহরীতি (Marriage system)
খাসিয়া সমাজে নিমা গোত্রের মধ্যে বিবাহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তারা এ কাজকে সবচেয়ে বড় পাপ হিসেবে গণ্য করে, ফলে এ ধরনের দম্পতি কোনো সামাজিক স্বীকৃতি পায় না।
খাসিয়াদের মধ্যে প্রচলিত বিবাহ দু'প্রকার। যথা- মনোমিলন ও বন্দোবস্ত বিবাহ। তাদের বিবাহে বয়সজনিত কোনো বাধা-নিষেধ নেই। ২৫/২৬ বছরের যুবতীর সাথে ১৭/১৮ বছরের যুবকের বিবাহও অনুষ্ঠিত হয়।
যুবক-যুবতীর মধ্যে বিবাহপূর্ব অবাধ মেলামেশার রীতি বর্তমান। এভাবে প্রেম-বিনিময়ের মাধ্যমে মনোমিলন হলে তারা পিতামাতার কাছে তাদের ইচ্ছা ব্যক্ত করলে পিতামাতা তাদের বিবাহের ব্যবস্থা করে।
আর বন্দোবস্তু বিবাহ পিতামাতা বা অভিভাবকের ইচ্ছানুসারেই সম্পন্ন হয়। এদের মধ্যে স্বগোত্র বিবাহ নিষিদ্ধ। বিবাহের পর স্বামীকে স্ত্রীর সঙ্গে শাশুড়ির বাড়িতে বসবাস করতে হয়।
দু তিনজন সন্তান হওয়ার পর স্বামী স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়িতে চলে যায়। খাসিয়াদের মধ্যে বহুবিবাহ প্রথার প্রচলন নেই। তবে স্ত্রী মারা যাবার কমপক্ষে এক বছর পর স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা যায়।
অর্থনীতি (Economy)
খাসিয়ারা কৃষিকাজের ওপর নির্ভরশীল। খাসিয়াদের প্রধান পেশা পান চাষ। তারা উন্নত ধরনের পান বিক্রি করে প্রচুর টাকা উপার্জন করে। পানের পাশাপাশি খাসিয়ারা সুপারির চাষও করে। পান চাষের বাইরে অন্য পেশায় তাদেরকে খুব কমই দেখা যায়।
এমনকি গরিব খাসিয়ারা পর্যন্ত চা শ্রমিক হিসেবে চা বাগানের কাজে যোগ দিতে পছন্দ করে না। যদিও বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত এলাকার খাসিয়ারা অবাধে পান, কমলা, মাছ, চাল ইত্যাদির ব্যবসা করে।
এছাড়া অনেক খাসিয়া জঙ্গলের গাছে থাকা মধুর চাক থেকে মধু আহরণপূর্বক জীবিকা নির্বাহ করে। অনেক ক্ষেত্রে মৌমাছি পালনকে কেন্দ্র করে তারা বাড়ির বারান্দা কিংবা ঘরের মধ্যে চাক তৈরি করে থাকে।
খাদ্যাভ্যাস (Food habit)
খাসিয়াদের প্রধান খাদ্য ভাত, মাছ, মাংস, শাকসবজি ও মন। মাংস তাদের খুব প্রিয় খাদ্য। মাংসের মধ্যে শূকর, হরিণ, সজারু ও মুরগিই প্রধান। সব জন্তু-জানায়ারের মাংসই এরা খায়।
মনকে তারা 'কা-ইয়া পুদকা' বলে। মদ ছাড়া তাদের কোনো অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় না। তারা শীতের মৌসুমে সমতল এলাকার বাজারগুলো থেকে প্রচুর মাছ ক্রয় করে তা দিয়ে শুটকি বানিয়ে সংরক্ষণ করে রাখে।
খাসিয়াদের কাছে সুপারি খুবই পবিত্র বস্তু। সাধারণত তারা অতিথিকে পান সুপারি ও চা দিয়ে আপ্যায়ন করে।
পরিবার (Family)
ঘাসিয়া পরিবার মাতৃপ্রধান বলে মেয়েদের প্রাধান্য বর্তমান। পরিবারে মেয়েদের কর্তৃত্ব ও প্রভাব যিথেষ্ট। সন্তান-সন্তুতিদের পরিচিতি, বংশ মর্যাদা ও উত্তরাধিকার প্রথা মাঝের গোত্রের দিক থেকে নির্ণীত হয়। তবে পরিবারের সব মেয়ে সম্পত্তির উত্তরাধিকার অর্জন করে না।
সাধারণত পরিবারের সর্বকনিষ্ঠা কন্যাকে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ কন্যাকে খাসিয়া ভাষায় 'কা-খাদ্দু' বলা হয়। পরিবারের অন্যান্য সন্তান 'কুর' বা গোত্রের ব্যবস্থা অনুসারে সম্পত্তির সামান্য অংশ পেতে পারে, তবে তা নির্ভর করে মায়ের ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর।
মাতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় স্ত্রীর গৃহে স্বামীর বসবাস করার রীতি থাকলেও ২-৩ সন্তান হবার পর স্বামী স্ত্রীকে নিয়ে নিজের বাড়িতে চলে যেতে পারে।
পোশাক-পরিচ্ছদ (Dress)
খাসিয়া মেয়েরা নিজেদের তৈরিকৃত 'কাজিম 'পিন' নামক এক প্রকার ব্লাউজ ব্যবহার করে। তাছাড়া তারা এক প্রকারের কাপড়ের বেন্ট কোমরে পরিধান করে।
এছাড়া তারা 'কা- জৈন-সেন নামক সিল্কের তৈরি লুঙ্গির মতো কাপড় পরিধান করে। পুরুষরা এক প্রকার পকেটহীন জামা ও লুঙ্গি পরিধান করে, খাসিয়া ভাষায় একে ফুংগ মানুহ' বলা হয়।”
খাসিয়াদের ব্যবহৃত পোশাকের মধ্যে রয়েছে জাইনসপং, থাইনডপ, জাইনপিয়েন, জাইনকুপ, থাপমু জইনসেম ইত্যাদি। খাসিয়াদের পোশাক-পরিচ্ছদ খুবই সাধারণ ও পরিচ্ছন্ন।
বাড়িঘরের ধরন (Housing pattern)
খাসিয়ারা সাধারণত টিলা ও পাহাড়ের পাদদেশে বাড়িঘর নির্মাণ করে থাকে। অবস্থানগত বিবেচনায় নদীর ধারে বসবাসকারীরা পাথর দিয়ে হাতির শুভ্রের মতো ঘর বাঁধে আর গভীর জঙ্গলের অধিবাসীরা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় মাচাং-এর উপর ঘর তৈরি করে।
বর্তমানে অনেক খাসিয়া শিক্ষার প্রসার ও আধুনিকতার কারণে বাঁশ এবং বেত দিয়ে কুঁড়েঘর কিংবা দালান ইত্যাদি ধরনের বাড়িঘর নির্মাণ করছে।
শিক্ষা (Education)
বাংলাদেশে বসবাসরত খাসিয়া সমাজে শিক্ষার হার কম। যদিও বর্তমানে খ্রিস্টান মিশনারির চেষ্টায় শিক্ষার হার বৃদ্ধির ব্যাপক চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়া 'খাসিয়া সমাজ কল্যাণ সমিতি' গঠনের মাধ্যমে সম্রাজের সার্বিক উন্নতির চেষ্টা করা হচ্ছে।
উৎসব (Festival)
খাসিয়াদের উৎসব ধর্মভিত্তিক। তাদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে (পূজা-পার্বণ, বিবাহ, শবদাহ ইত্যাদি) নৃত্য গীত অপরিহার্য। নৃত্যকে খাসিয়ারা কেবল বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করে না বরং একইসাথে সামাজিক ও ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার উপাদান হিসেবে গণ্য করে।
খাসিয়া সমাজে প্রচলিত নৃত্যের মধ্যে রয়েছে- "কা-শাদ-সুক 'মাইন সিয়েম (কুমারি নৃত্য)', 'কা-শাদ-কুদ লিংকা (বীজ বপনের নৃত্য)', 'কা-শাদ নশাকাইরিয়াৎ (ভূমির উর্বরতার জন্য নৃত্য), নংগ্ৰেম নৃত্য ইত্যাদি।
এসব নৃত্যে খাসিয়ারা যেসব বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করেন তার মধ্যে দোতারা, মেরীংগদ, মেরীনথিং, সারং, কা-সিং-ডিয়েংমং, পাদিআহ্, কাট্সা প্রভৃতি প্রধান।
উল্লেখ্য যে, বর্তমানে খাসিয়াদের অধিকাংশ খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী হলেও তারা নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চা বাদ দেয়নি।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (Funeral)
খাসিয়ারা মনে করে, মৃত্যুতেই জীবনের পরিসমাপ্তি। খাসিয়া সমাজে মৃতদেহ দাহ করা হয়। দাহ করার পর ছাই ও হাড় কুড়িয়ে নিয়ে মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
খাসিয়ারা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে মৃতদের প্রতি ভক্তি প্রদর্শন করে। পাথরের এ স্মৃতিস্তম্ভকে 'কী-মাউনিয়াম' বলে। খাসিয়া রমণীরা স্বামীর মৃত্যু ঘটলে শবদাহের পর হাড় কুড়িয়ে মালা গেঁথে গলায় পরিধান করে।
এই মালা পরিধান করার পর থেকে তারা আর কোনোরকম অবৈধ কাজে লিপ্ত হতে পারে না, বরং বাকি জীবন স্বামীর চিন্তায় কাটাতে হয়।
0 Comments